শিরোনাম
লন্ডন ১৫ জুন ২০২৩ (বাসস/এএফপি): ইংল্যান্ড কি তাদের অতি-আক্রমনাত্মক "বাজবল" ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলে অ্যাশেজ পুনরুদ্ধার করতে পারবে? নাকি অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে থমকে দাঁড়াবে?
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পাওয়া যাবে এর উত্তর। আগামীকাল এজবাস্টনের প্রথম টেস্ট দিয়ে শুরু হচ্ছে দুই দলের পাঁচ ম্যাচের সিরিজ। গত বছর ব্রেন্ডন ম্যাকালাম কোচ এবং বেন স্টোকস অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহনের পর ১৩ টেস্টের মধ্যে ১১টিতে জিতে বিশে^র অন্য ক্রিকেট দলকে শক্তিশালী বার্তাই পাঠিয়েছে ইংল্যান্ড।
তবে গত সপ্তাহে ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ২০৯ রানে হারিয়ে শিরোপা জয় করা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের অলআউট আক্রমণের নীতি কাজ করবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে।
ইংল্যান্ডের মাটিতে ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ অ্যাশেজ জিতেছিল স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বে। তাদের বিপক্ষে বিকল্প কোন পরিকল্পনা স্টোকসের দলের আছে কিনা সেটিই বড় প্রশ্ন। অস্ট্রেলিয় গণমাধ্যমের কাছে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘ তারা কি প্ল্যান ‘বি’ পেয়েছে? তারা দেখিয়েছে যে তারা ক্রিকেটের এই স্টাইলটির জন্য যথেষ্ট ভাল। কিন্তু চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে বিশ্বমানের বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে, যা অস্ট্রেলিয়ার আছে।’
ইংল্যান্ডের নবনিযুক্ত ক্রিকেট প্রধান রব কি জাতীয় দলের দায়িত্ব ম্যাককালাম ও স্টোকসের কাছে দেয়ার আগে ১৭টি টেস্টের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড। এই দুইজনের তত্বাবধানে দীর্ঘ ফর্মেটের এ ক্রিকেটের একটি গতিশীল সংস্করণ চালু করা হয়, নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়কের ডাক নামানুসারে এর নাম দেয়া হয় ‘বাজবল’। আর অলরাউন্ডার স্টেকস অবশ্য বলেছেন বর্তমান পদ্ধতি পরিবর্তনের কোন ইচ্ছা তাদের নেই। ৩২ বছর বয়সি ওই ক্রিকেটার বিবিসিকে বলেন,‘ এখানে কোন কিছুরই পরিবর্তন ঘটবে না। কারণ এই পদ্ধতিতে আমরা অবিশ^াস্য সাফল্য পেয়েছি।’
অ্যাশেজ সিরিজে নিজেদের খুঁজে পেতে বিগত ১২ মাস ধরে আমরা যেভাবে খেলে আসছি সেখান থেকে যদি সামান্যতম পরিবর্তনও করা হয়, তাহলে ওই ১২ মাসের সব অর্জনই অর্থহীন হয়ে যাবে।’
আগের বছর ইংল্যান্ডের ওভার প্রতি রানের গড় ছিল ৪.৮৫। টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে সফল পেসার জেমস এন্ডারসন অবশ্য বলেছেন এর দ্বারা বোলাররাও সুবিধা পায়। বিষয়টি তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন,‘ বেনের কাছে বোলিং রান রেটের কোন মুল্য নেই। তার ভাবখানা এরকম, তুমি কত রান করছ তা নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই। যত দ্রুত সম্ভব আমি ২০ উইকেট দখল করতে চাই। তখন একজন বোলার হিসেবে আপনি ক্রমাগত ভাবতে থাকবেন ‘আমি কিভাবে পরবর্তী উইকেট নিচ্ছি’?
স্টোকসের দর্শনের চেয়ে ইংল্যান্ড সমর্থকদের কাছে উদ্বেগের বিষয় হল তার ফিটনেস। স্টোকস একজন প্রানবন্ত পেসার। হাঁটুর ইনজুরির কারণে সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিং করেননি তিনি। ম্যাচটি ১০ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড।
এরপরেই অবশ্য নিজেকে বোলিং করার উপযুক্ত বলে ঘোষনা দেন স্টোকস। এন্ডারসন ও সতীর্থ পেসার ওলি রবিনসন যদিও ইনজুরিতে ভুগছিলেন। তবে তারা ইনজুরি কাটিয়ে সেরা একাদশে জায়গা পেয়েছেন।
এবারের অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ড দলে থাকছেন না জ্যাক লিচ। বাঁহাতি ওই স্পিনার পিঠের ইনজুরিতে ভুগছেন। পরিবর্তিত হিসেবে ডাক পেয়েছেন মঈন আলী। এর ফলে এজবাস্টানের হোমগ্রাউন্ডেই দুই বছরের টেস্ট নির্বাসন থেকে প্রত্যাবর্তন ঘটবে তার। যদিও অ্যাশেজে বেশ রান দিয়ে থাকেন এই অফ স্পিনার। যার গড় ৬৪.৬৫।
এদিকে বর্তমান অ্যাশেজ জয়ী অস্ট্রেলিয়ার আছে বিশ^মানের স্পিনার নাথান লিয়, যিনি ৫০০ উইকেটের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন। অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও দারুন ভাগ্যবান, কারণ তিনি বেঁছে নিতে পারছেন ফাস্ট বোলিংয়ের জন্য মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউডের মধ্যে থেকে একজনকে। পেস বোলিংয়ের জন্য স্কট বোলান্ডকেও এই তাকিায় পাচ্ছেন তিনি।
বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পাঁচ উইকেট নিয়ে দারুন মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন বোলান্ড। ক্যারিয়ারে আট টেস্ট থেকে তার উইকেট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪.৫৭ গড়ে ৩৩টি। কামিন্স বলেন,‘ (ইংল্যান্ডে) অ্যাশেজ জয় করা খুবই কঠিন। ২০ তম বিজোড় বছরে সেটি জয় করা সহজ হবে না।’