শিরোনাম
ঢাকা, ১৭ জুন, ২০২৩ (বাসস) : আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে ৫৪৬ রানের বিশাল জয়ের পেছনে দলগত প্রচেষ্টাকে বড় করে দেখছেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন দাস। এমন দুর্দান্ত জয়ের পেছনে দলের সকলের পারফরমেন্সের প্রশংসাও করেছেন তিনি।
ওান বিবেচনায় নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। সেই সাথে ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় ও এ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় জয়ের নজির গড়েছে টাইগাররা।
লিটনের মতে,এমন আধিপত্য বিস্তার করা জয়ের পর অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ম্যাচে এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়া সম্ভব নয়।
ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, ‘মাঝে মাঝে আবহাওয়া অসহনীয় ছিল এবং উইকেট সহজ ছিল না। প্রত্যেক ব্যাটারের কৃতিত্ব পাওয়া উচিত। সত্যি কথা বলতে, আমাদের বোলাররাও ভালো লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বল করেছে। দলের জন্য এটি অনেক বড় অর্জন। অধিনায়ক হিসেবে আপনি এর থেকে বেশি কিছু চাইতে পারেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শাস্ত ও জয়ের নৈপুন্যে বড় স্কোরের পরই ধারনা করেছিলাম প্রথম ইনিংসের স্কোরের উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। প্রতিপক্ষকে ১৫০এর নিচে গুটিয়ে দেয়ার পর পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু এমন উইকেটে ব্যাট করা কঠিন ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসেও আমাদের ব্যাটাররা নিজেদের সেরাটা দেখিয়েছে। আসলে এই কৃতিত্ব পুরো দলের। এটা সম্পূর্ণ দলগত প্রচেষ্টা।’
পেসারদের প্রশংসা করে লিটন জানান, পেসারদের পারফরমেন্স অন্যরকম আনন্দ দিয়েছে। ম্যাচে ১৪ উইকেট নেন বাংলাদেশের তিন পেসার এবাদত হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ।
লিটন বলেন, ‘আমরা কখনও তিন পেসার নিয়ে খেলি না। কিন্তু উইকেটের আচরণে এবার তিন পেসার খেলার দাবী রাখে এবং আমরা সেটি করেছি। উইকেট পেসারদের অনেক বেশি সহায়ক ছিলো এবং নিজেদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করেছে তারা।’
পেসারদের ভাল পারফরমেন্স করার পরও ঘরের মাঠে নিয়মিত পেস-বান্ধব উইকেট হবে না বলেই স্পস্ট জানিয়েছেন লিটন।
তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে আমরা কাদের বিপক্ষে খেলছি। বিষয়টা এমন নয়, আমরা শুধু স্পিন-বান্ধব উইকেট বা পেস-বান্ধব উইকেটে খেলবো। প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা বিবেচনায় উইকেট প্রস্তুত করা হবে। এটিকে হোম অ্যাডভান্টেজ বলে।’
বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ এখন আগের চেয়ে যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মনে করেন লিটন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পাইপলাইনে চার/পাঁচজন পেসার আছে যারা যেকোন সময় সেরা একাদশে সুযোগ পেতে পারেন। আমাদের ভালো অফ-স্পিনার, বাঁ-হাতি স্পিনার আছে। এজন্য আমি বলবো, আমাদের বোলিং আক্রমণ এখন অনেক বেশি শক্তিশালী।’
লিটন বলেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের ব্যাটিংয়ে একটা সমস্যা ছিল। আপনার টপ অর্ডার যদি পারফর্ম না করে, তাহলে টেস্ট ক্রিকেটে টিকে থাকা কঠিন। আমি খুশি, এই টেস্টে ব্যাটাররা পারফর্ম করেছে এবং নিজেদের সেরাটা দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেললেও জাকির যথেষ্ট পরিপক্ক। একই কথা জয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমরা চাই তারা নিজের সেরাটা প্রদর্শন করুক, সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলুক। জাকির রান আউট না হলে বড় ইনিংস খেলতে পারতো। সে যেভাবে ব্যাটিং করেছে তাতে আমি খুশি।’
সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি নিয়ে কথা বলা বন্ধ করার সময় এসেছে বলে মনে করেন লিটন। তার বিশ্বাস, কেউ খেলুক আর না খেলুক বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি হলো, পাওয়া একাদশ নিয়েই আপনাকে খেলতে হবে। কে থাকবে, কে থাকবেনা তা নিয়ে চিন্তা করার সময় নেই। হয়তো দুই বা চার বছর পর এমন দিন আসবে যখন সাকিব থাকবে না। বাংলাদেশ দলকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যে দলটা পেয়েছি এটিই বাংলাদেশের সেরা দল। তারা নিজেদের জায়গায় ভালো করেছে।’
টেস্টর দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। মোমিনুল হকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এজন্য শান্তর প্রশংসাও করেছেন লিটন। তিনি জানান, অনুশীলন পদ্ধতি পরিবর্তনই তার ধারাবাহিক হবার পেছনে মূল রহস্য।
তিনি বলেন, ‘খুব বেশি হয়নি আমিও শান্তর মতো একই জায়গায় ছিলাম। আমি তার সাথে অনেক কথা বলেছিলা। জানি না, এটি তাকে কতটা সাহায্য করেছে। আমি বিশ্বাস করি, সে তার অনুশীলনের পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে এবং সে এখন অনেক বেশি গোছালো। অবশ্যই, আপনি যখন কিছু দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবেন তখন আপনি আপনার দুর্বলতা ও শক্তিমত্তা কুঝতে পারবেন।’