শিরোনাম
সিলেট, ১৩ জুলাই ২০২৩ (বাসস) : প্রতিপক্ষের শক্তি এবং রশিদ খানকে নিয়ে চিন্তা না করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সতীর্থদের খেলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি ব্যাটারের কাছে দুঃস্বপ্রে নাম লেগ স্পিনার রশিদ।
সাকিবের মতে, প্রতিপক্ষের দিকে বেশি মনোযোগ না দিয়ে, নির্দিষ্ট কোন খেলোয়াড়ের কথা না ভেবে দল হিসেবে খেললেই বাংলাদেশের জয়ের সুযোগ অনেকখানি বেড়ে যায়।
আফগানিস্তাানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগের সাকিব বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা দল হিসেবে তখনই ভালো খেলি যখন আমরা অন্য দলকে নিয়ে চিন্তা কম করি। আমরা যখন নির্ভার থাকি ও নিজেদের খেলাটা কিভাবে ভালো করা যায় সেই চিন্তা করি। নিজেদের জায়গা থেকে সবাই ১০-২০ শতাংশ বেশি উন্নতি করার চেষ্টা করি, আমরা মনে হয় তখনই আমাদের দল ভালো পারফর্ম করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন কন্ডিশন নিয়ে বেশি ভাবি, প্রতিপক্ষ ও নির্দিষ্ট কোন খেলোয়াড়কে নিয়ে বেশি চিন্তা করি, আমরা তখন নার্ভাস হয়ে পড়ি ও শতভাগ পারফর্ম করতে পারি না। আমি মনে করি আমরা এসব যত কম করতে পারি, আমাদের জন্য তত ভাল।’
সাকিব জানান, দলের মধ্যে পারফরমেন্স সংস্কৃতি গড়ে তোলার এটাই সেরা সময়। কারন বিশ্বকাপ বা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টের দিকে নজর রেখে শক্তিশালী দল গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ আমাদের দলও কোন নির্দিষ্ট ব্যাটার বা বোলারের উপর নির্ভার করে নেই। আমরা দল হিসেবে পারফর্ম করতে চাই এবং দল হিসেবে ম্যাচ জিততে চাই। আমরা এটা রাখার চেষ্টা করবো।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ নিয়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নামবে আফগানিস্তান।
বাংলাদেশ সেই দুর্বল দল আর নেই, যা আফগানিস্তান পূর্বে মোকাবেলা করেছে। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে তিন ম্যাচের সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের হোয়াইটওয়াশও করেছে টাইগাররা।
সাকিব জানান, আফগানিস্তানকে হারানো কঠিন তবে দল আত্মবিশ্বাসী, বিশেষ করে ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ দুই সিরিজের পারফরমেন্সের পর।
সাকিব বলেন, ‘আমরা ঘরের মাঠে গত দু’টি সিরিজে ভালো খেলেছি। এটি আমাদের জন্য আরেকটি নতুন চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তান অবশ্যই ভালো দল। আমরা যেভাবে ক্রিকেট খেলছি এবং যেভাবে আমরা উন্নতি করছি, প্রতিটি ম্যাচেই আমরা সেরকম পারফরমেন্স করতে চাই।’
ওয়ানডে সিরিজে লেগ-স্পিনার রশিদ খানের সামনে বাংলাদেশের ব্যাটাররা অসহায় থাকলেও উইকেট শিকারে পারদর্শী ছিলেন পেসার ফজলহক ফারুকী। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আরও বেশি ভয়ংকর রশিদ এবং যেকোন কন্ডিশনে রশিদের স্পিন খেলাটা বিশ্বের প্রত্যক ব্যাটারের কাছেই কঠিন।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে রশিদকে মুখোমুখি হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নির্ভার ছিলেন সাকিব। তার মতে, কিভাবে নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে মোকাবেলা করা হবে সেটি নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা।
সাকিব বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট কোন ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলিনি বা চিন্তাও করিনি। যারা ব্যাটিং বা বোলিং করবে, আমি নিশ্চিত, তারা কি কি পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে সেটি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আসলে কাউকে বলার বিষয় নয় এবং করারও বিষয় নয়। যেকোন খেলোযাড়দের দায়িত্ব হবে দলের জন্য ভালো পারফর্ম করতে পারা। আমি যেমনটা বলেছি, টি-টোয়েন্টিতে মোমেন্টাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কিভাবে খেলাটা শুরু করি, সেটা আমার কাছে মনে হয়, ম্যাচের ফলের দিকে বা ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে অনেক বেশি। ব্যাটিং করি বা বোলিং, শুরুটা ভালো করা গুরুত্বপূর্ণ।’
এমনকি কন্ডিশন নিয়ে চিন্তিত নন সাকিব। তার মতে, যেকোনো কন্ডিশনে খেলার অস্ত্র আছে বাংলাদেশের।
তিনি বলেন, ‘আমরা কন্ডিশন নিয়ে সত্যিই চিন্তিত নই। এর সবচেয়ে বড় কারণ দুই দলের কন্ডিশন সমান। এছাড়াও আমি মনে করি না আমরা এমন কোন দল না যে আমাদের কন্ডিশনের সুবিধা নিতে হবে। আমি অন্তত বিশ্বাস করি, যেকোন কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে এবং যেকোন দলের বিপক্ষে প্রতিন্দ্বন্দিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলার ক্ষমতা আছে আমাদের । আমি আমার দলের কাছ থেকে এটাই আশা করবো, আমরা সেই মানসিকতা নিয়ে নির্ভার হয়ে মাঠে নামবো এবং দলের প্রয়োজনের জন্য আমরা প্রস্তুত।’
সাকিব আরও বলেন, ‘উইকেট নিয়ে কেউ বেশি কিছু বলেনি। আমি ও কোচ একটু কথা বলেছি, এছাড়া দু’একজন ক্রিকেটার উইকেটের কাছাকাছি গিয়েছে কি-না জানি না। আমি যেমন বলেছি, আমরা কন্ডিশন নিয়ে চিন্তিত নই। অবশ্যই, আফগানিস্তান ভাল দল, আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। কিন্তু আমরা যদি বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপের কথা চিন্তা করি, তাহলে তাদের বিপক্ষে আবার মুখোমুখি হবার, তাদের সম্পর্কে আরও কিছু জানার এবং তারা কী করতে পারে এগুলো জানার জন্য এটি ভালো সুযোগ।’