শিরোনাম
ফোর্ট লডারডেল (যুক্তরাষ্ট্র), ২৭ জুলাই ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : ইন্টার মিয়ামির উপর লিওনের মেসির প্রভাব সবাই স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। মাত্র ১২০ মিনিট মাঠে থেকে ইতোমধ্যেই তিন গোল ও এক এ্যাসিস্টে এ যেন নতুন ক্লাবের ভিন্ন পরিবেশে এক স্বপ্নের শুরু। কিন্তু তার সতীর্থদের দাবী এসবের বাইরে থেকেও মেসির প্রভাব দলে আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
সাতবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী এবং সম্প্রতি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ শিরোপা অর্জন করার একজন বিশ্বসেরা খেলোয়াড় যখন মেজর লিগ সকারের মত লো-প্রোফাইল একটি লিগের সর্বশেষ দলটিতে যোগ দেন, তখন আলোচনার মোড়ই ঘুরে যায়। বার্সেলোনায় বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের সাথে ক্যারিয়ারের বেশীরভাগ সময় কাটানোর পর মেসি ব্রাজিলিয়ান নেইমার ও ফ্রেঞ্চম্যান কিলিয়ান এমবাপ্পের মত সতীর্থদের পিএসজিতে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। এমন একটি ড্রেসিংরুম শেয়ারের সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন যেখানে প্রায় সব মুখই শুধু তার কাছেই নয়, বিশ্ব ফুটবলেও অচেনা।
মিয়ামির সব খেলোয়াড়দের তুলনায় প্রায় মিলিয়ন মিলিয়ন বেশী অর্থ আয় করা মেসি যে ক্যারিয়ারের অন্তিম মুহূর্তে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিবেন তা একেবারেই অচিন্ত্যনীয় ছিল। মেসিকে সতীর্থ হিসেবে পেয়ে মিয়ামির খেলোয়াড়রা যেন আকাশে উড়ছে। মেসিও তাদের সাথে দারুণভাবে মিশে গেছেন, যা তার অবয়বেই স্পষ্ট। স্বপ্নেও হয়তো কেউ কেউ কল্পনা করতে পারেনি এমন একজন সুপারস্টারের সাথে একদিন একই দলে তারা খেলতে পারবে। হঠাৎ করেই দলে বড় এক পরিবর্তন এনে মেসির সাথে মিয়ামিতে আরো যোগ দিয়েছেন বার্সেলোনার আরেক সাবেক তারকা সার্জিও বাসকুয়েটস। স্পেনের হয়ে এই মিডফিল্ডারেরও বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা আছে।
যদিও বিশ্বসেরা এই দুই তারকা দ্রুতই তাদের তারকা তকমাকে দুরে ঠেলে নতুন সতীর্থদের সাথে দারুনভাবে মিশে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফুল-ব্যাক ডিআন্দ্রে ইয়েডলিন বলেছেন, ‘সত্যি বলতে কি, আমার কাছে মনে হয়েছে তারা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। তারা এখানে এসেছে ঠিকই, কিন্তু নিজেদের জাহির করতে নয়। তারা খুবই সাধারণ ভাবে অন্যদের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে।’
ইয়েডলিনের কাছ থেকেই মেসি মিয়ামির অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পেয়েছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের হয়ে খেলেছেন ইয়েডলিন। মার্কিন এই ডিফেন্ডার আরো বলেন অনুশীলনে এই দুজনের জন্য আলাদা বিশেষ কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এমনকি তারা দুজনেই জানেন তাদের যেকোন ইচ্ছাই ক্লাব কর্তৃপক্ষ পূরনে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যা খাচ্ছি সেই একই খাবার তারাও খাচ্ছে, আমরা যেভাবে অনুশীলন করছি সেটাই তারা করছে, একই ট্রেইনার ব্যবহার করছে। কোন কিছুতেই কোন পার্থক্য নেই। সে কারনেই আমরা অনুভব করছি তারা আমাদেরই একটি অংশ। আর এটা আমাদের সাহায্য করছে।’
আটালান্টার বিরুদ্ধে লিগ কাপে মঙ্গলবার ৪-০ গোলে জয়ের মাধ্যমে ইন্টার মিয়ামি নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন মেসি। ম্যাচে পর পুরো দলকে গোলাপি ও কালো রঙের হেডফোন উপহার দিয়েছেন মেসি। ইয়েডলিন মনে করেন এখানে যদি তাদের এবং আমাদের মধ্যে কোন ধরনের পার্থক্য গড়ে দেয়া হতো তবে পুরো দলই ভেঙ্গে যেত। কেউই আসলে বুঝতে পারেনি মেসির মত খেলোয়াড়কে পাশে পেয়ে তারা কি করবে। এটা সকলের জন্য একটি তাৎক্ষনিক বিস্ময় ছিল।
মেসি ও বাসুকয়েটসকে পেয়ে বদলে যাওয়া মিয়ামির সামনে এখন একটাই চ্যালেঞ্জ, নিজেদের খেলার যতটা সম্ভব উন্নতি করা। আর এক্ষেত্রে দুই তারকাও তাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছেন।
১৯ বছর বয়সী ফুল-ব্যাক নোহা এ্যালেন বলেছেন মেসির সাথে খেলতে পারাটা সত্যিই আনন্দের, ‘সে আসাতে আমরা পুরোটা সময় দারুন উপভোগ করছি। দলের মধ্যে সে বাড়তি অনুপ্রেরনা যুগিয়েছে। আমরা আরো বেশী করে মনোযোগী হয়েছি। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের সাথে খেলতে পারার অনুভূতি আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে।’