শিরোনাম
লক্ষ্মীপুর, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত শহীদ সাব্বির হোসেন রাসেলের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ২৯ দিন পর তার মরদেহ উত্তোলন করে প্রশাসন।
এসময় সাব্বিরে মা মায়া বেগমসহ স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকা ভারী হয়ে উঠেছে। শোকে নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার বাবা আমির হোসেন। মা মায়া বেগম ছেলের মুখ দেখার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সুযোগ হয়নি।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা সদরের সমসেরাবাদ সাব্বিরের নানার বাড়ি এলাকায় লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পাশে মনির উদ্দিন পাটোয়ারী জামে মসজিদের কবরস্থান থেকে সাব্বিরের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এসময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তাদের তত্ত্বাবধানেই ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পুনরায় দাফন করা হবে।
পুলিশ জানায়, ৪ আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেমে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাব্বিরের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করে স্বজনরা। ১৪ আগস্ট সাব্বিরের বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ্ উদ্দিন টিপুকে প্রধান করে ৯১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৫ আগস্ট মামলাটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল সদর আদালতের বিচারক আবু নোমান ময়নাতদন্তের জন্য সাব্বিরের মরদেহ উত্তোলনের আদেশে দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেন বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্তের জন্য সাব্বিরের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ফের মরদেহ দাফন করা হবে।
নিহত সাব্বির সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে ও দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়ে লক্ষ্মীপুরের মাদাম ব্রিজ ও তমিজ মার্কেট এলাকায় সাব্বিরসহ ৪ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ দিন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে শতাধিক ছাত্র-জনতা আহত হয়।