বাসস
  ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:০২

আন্দোলনকারীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দাবি আহত স্বাধীনের

প্রতিবেদন : রফিকুল ইসলাম সুইট 

পাবনা, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪ : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত রূপান্তর স্বাধীন। গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে স্বাধীন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। তবে তিনি মারা যাননি। অলৌকিক ভাবে বেঁচে আছেন।

জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের দ্বীপচর গ্রামের ব্যবসায়ী মো. শুকুর আলী ও গৃহিণী রুপালি বেগমের একমাত্র সন্তান আরাফাত রূপান্তর স্বাধীন(২০)। স্বাধীন সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। গত ৪ আগস্ট ১১ টার পর এডওয়ার্ড কলেজ গেট থেকে বৈষম্য বিরোধী মিছিল শুরু হয়। পরে আন্দোলনকারীরা মিছিলটি নিয়ে পাবনা প্রেসক্লাবের পাশে আব্দুল হামিদ রোডের ট্রাফিক মোড়ে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২ টার দিকে সমাবেশ স্থলের উত্তর দিক থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গুলি শুরু করে। এ সময় নিলয় ও জাহিদুল শহিদ হন। শহিদ জাহিদুলের লাশ উদ্ধারের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন স্বাধীন। আহত স্বাধীনকে প্রথমে বেসরকারি শিমলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে স্বাধীনের শরীর থেকে বুলেট বের করার পর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বাধীন বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ব্যাপারে আহত আরাফাত রূপান্তর স্বাধীন বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলাম। গত ৪ আগস্ট সকাল ১১ টার দিকে আমি এডওয়ার্ড কলেজ গেটে অবস্থান করি। তারপর বৈষম্য বিরোধী বিশাল মিছিল বের হয়ে পাবনা প্রেসক্লাবের পাশে অবস্থান করে। দুপুর ১২ টার দিকে সমাবেশ স্থলের উত্তর পাশে সদর থানার দিক থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায়। এসময় নিলয় ও জাহিদুল শহিদ হন।

আহত জাহিদুলকে উদ্ধার করতে গেলে একটি বুলেট এসে আমার বাম চোয়ালে লাগে। এ সময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। আন্দোলনরত সহযোদ্ধারা আমাকে উদ্ধার করে পাশের বেসরকারি শিমলা হাসপাতালে ভর্তি করে। এখানে আমার শরীর থেকে বুলেট বের করা হয়। এরপর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আমার চিকিৎসা চলছে। অর্নাস প্রথম বর্ষ পরীক্ষার জন্য পাবনায় এসেছি, পরীক্ষা দিচ্ছি।

আমি আমার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের এবং আন্দোলনকারীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে আহত আরাফাত রূপান্তর স্বাধীনের পিতা মো. শুকুর আলী বলেন, ‘আমার ছেলে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়ায় আমি খুশি। আমার ছেলের মুখে গুলি লেগে পিছন দিক দিয়ে বের হয়ে গেছে। এভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে কেউ সাধারণত বাঁচে না। আমার ছেলে এরকম গুলিবিদ্ধ হয়েও আল্লাহর রহমতে অলৌকিক ভাবে বেঁচে আছে। সিএমএইচ এ চিকিৎসা হচ্ছে। আমাদের সন্তানেরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গিয়ে নিহত ও আহত হয়েছে। দেশে যেন আর কোন বৈষম্য না থাকে এটাই আমার চাওয়া।

সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মো. নূরুল আলম জানান, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত আরাফাত রূপান্তর স্বাধীন আমাদের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র। সে এবার অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী। সে পরীক্ষা দিচ্ছে। আমার জানামতে সে নম্র ভদ্র একজন শিক্ষার্থী।

আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছি।

তবে সরকার যদি আাহতদের সুচিকিৎসায় এগিয়ে আসে তাহলে পরিবারগুলো একটু রেহাই পায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।