বাসস
  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৫৩

নেত্রকোনার পর্যটন এলাকার নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ

পাহাড়, সমতল, সীমান্ত, নদী, হাওরের সংমিশ্রণে নেত্রকোনা জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৈচিত্র্যময়। ছবি : বাসস

নেত্রকোনা,১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫(বাসস): সীমান্তবর্তী জেলার মধ্যে নেত্রকোনা একটু ব্যতিক্রম। পাহাড়,সমতল,সীমান্ত,নদী, হাওরের সংমিশ্রণে এ জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৈচিত্র্যময়।

অপার সম্ভাবনা থাকার পরও পিছিয়ে থাকা নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দায় পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে অবশেষে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের ইউনিট স্থাপনসহ বিভিন্ন সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ।নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে এ জেলায় ঘুরতে আসা পর্যটক বেড়ে যাবে এবং অর্থনীতির চিত্র পাল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।   অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে নেত্রকোনা।

পাহাড়ি সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা। নদী আর পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি এই অঞ্চলটি পর্যটকদের কাছে যেন স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। এক চিলতে আনন্দ আর সুবাতাস পেতে ছুটে আসেন ভ্রমণ পিপাসুরা।রাস্তা ঘাটের দুর্দশা পেড়িয়ে নিরাপত্তাজনিত নানা সমস্যা নিয়েই নিজেকে আনন্দিত করতে যান সকলেই। প্রতিবছর সাদা মাটির পাহাড়, সোমেশ্বরী নদী, বিজয়পুর জিরো পয়েন্ট, কলমাকান্দার লেঙ্গুরা,চন্দ্র ডিঙা জিরো পয়েন্ট,পাতলাবন, সাত শহীদের মাজারসহ এসকল পর্যটন স্থানগুলো দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুদের আনাগোনা লেগেই থাকে। এতো সম্ভাবনা থাকার পরেও  ঘুরতে আসা পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধার অভাবে উন্নত হচ্ছে না জেলার সম্ভাবনাময় এ খাতটি।

জানা গেছে, প্রতিবছর সাধারণ পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও শুধুমাত্র নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটন স্থানগুলোতে লাখো মানুষ ঘুরতে আসেন। তারপরও অবহেলিত ছিলো এলাকাগুলো। যে কারনে সম্ভাবনার পরও পিছিয়ে নেত্রকোনা জেলা।

অবশেষে পিছিয়ে থাকা জেলার এই পর্যটন খাতকে ঘিরে নতুন করে তৈরি হয়েছে সম্ভাবনা। বিলম্ব হলেও প্রথমেই নিরাপত্তা নিশ্চিতের মাধ্যমে পর্যটনকে বিকশিত করতে কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট  পুলিশ। ফলে নিরাপত্তার পাশাপাশি থাকছে নানা সুযোগ-সুবিধা। এতে করে এ অঞ্চলের পর্যটক আরো বাড়বে বলে মনে করছেন ঘুরতে আসা পর্যটক, স্থানীয়সহ সংশ্লিষ্টরা। উন্নত হবে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন মানের। ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনৈতিক চাকা , এমনটি জানালেন ঢাকা থেকে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা শফিকুজ্জামান সহ অন্যরা।

এ ব্যাপারে টুরিস্ট পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি এম সাখাওয়াত হোসেন নেত্রকোনার পর্যটন এলাকাগুলো ঘুড়ে এসে  বাসসকে  জানান,"নেত্রকোনা একটি পর্যটন জেলা,শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, পর্যটনে এগিয়ে । পর্যটন জেলা  হয়েও এখানে নানা অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা গড়ে না উঠায় এবং পর্যটকদের যেসকল নুন্যতম  সুযোগ সুবিধা থাকার দরকার সেগুলো না থাকায় এ জেলার পর্যটন খাতটি সেভাবে গড়ে উঠেনি।দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকরা এখানে ঘুরতে এসে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা ও রাত্রিযাপন করতে নিরাপদ মনে  করেন না। আমরা বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ থেকে উদ্যোগ নিয়েছি,দেশে,বিদেশ থেকে যেন এখানে আরো বেশি করে পর্যটকরা আসেন এবং এই পর্যটন খাত যেন এ অঞ্চলের অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে পারে। সেজন্য আমরা জেলা প্রশাসন,জেলা পুলিশসহ সবাই মিলে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নিয়েছি।তারই অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে  আমরা নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর,কলমাকান্দায় যেসকল পর্যটন এলাকা রয়েছে সেখানে পুলিশ হেল্পডেস্ক,ইনফরমেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। নেত্রকোনা জেলাকে ট্যুরিস্ট পুলিশের আওতায় নিয়ে এসে এখানকার আইন শৃঙ্খলার উন্নতি এবং পর্যটকরা যেন এখানে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন উপভোগ করতে পারেন তেমন একটা পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করতে চাই।