শিরোনাম
কক্সবাজার, ১০ মার্চ ২০২৫ (বাসস): পর্যটক কিংবা ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। এখন থেকে কক্সবাজার ভ্রমণের সব তথ্য এক অ্যাপেই পাওয়া যাবে। মুঠোফোনের এ অ্যাপটির নাম ‘ভ্রমণিকা’।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে 'Vromonika' নামের অ্যাপটি পাওয়া যাচ্ছে এবং ডাউনলোড করে সহজেই ব্যবহার করা যাচ্ছে।
আজ সোমবার দুপুর ১২ টায় কক্সবাজারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘ভ্রমনিকা’ অ্যাপের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব মামুনুর রশীদ ভুঁইয়া, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সাইফুদ্দিন শাহীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দিন, কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার।
অ্যাপটিতে কক্সবাজারে দর্শনীয় স্থান, ব্যাংক ও এটিএম বুথের তথ্য, টিকিট কাউন্টার, হোটেল-রিসোর্টের ঠিকানা, ট্যুরিস্ট বাসের তথ্য, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, কিটকট চেয়ার, লকার সার্ভিসের তথ্য, জরুরি সেবা ও ঘোষণা দেওয়া আছে। এসব প্রতিটির পাশে যোগাযোগের নম্বর ও ঠিকানা দেওয়া রয়েছে। ফলে সহজেই আগে থেকে সব বুক করেই পর্যটকেরা কক্সবাজার ভ্রমণ করতে পারবেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পর্যটকেরা যেন ভ্রমণের সময় হয়রানি কিংবা বিড়ম্বনার শিকার না হন তার জন্য ‘পারসোনাল ট্রাভেল গাইড’ হিসেবে অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য রয়েছে সেখানে, যা ব্যবহার করলে সব তথ্য হাতের মুঠোয় পাওয়া যাচ্ছে।
যা আছে অ্যাপটিতে: মুঠোফোনে ‘ভ্রমনিকা’ অ্যাপটি ডাউনলোডের পর ভ্রমণ নির্দেশনা ও সতর্কতা দেখা যাবে। এরপর ১২টি আলাদা বিভাগ দেখা যাবে অ্যাপ স্ক্রিনে। দর্শনীয় স্থানে ক্লিক করলেই ইনানী, হিমছড়ি, লাবণী, কলাতলী, সুগন্ধা, সেন্ট মার্টিন, মহেশখালী, সোনাদিয়া দ্বীপসহ কক্সবাজারের অন্তত ৪৫টি দর্শনীয় স্থানের নাম দেখা যাবে। এর প্রতিটিতে ক্লিক করলেই সেখানে যাওয়ার গুগল ম্যাপ, আবাসন ও খাবারের তথ্য এবং যাওয়ার উপযুক্ত সময় দেখা যাবে।
কক্সবাজার ভ্রমণে বাস, ট্রেন, জাহাজ ও উড়োজাহাজের তথ্যও রয়েছে ভ্রমণিকায়। সেখানে বাসের তথ্যে ক্লিক করলেই অনলাইন বাস টার্মিনালের ওয়েবসাইটে যেতে পারবেন পর্যটকেরা। সেখান থেকে আগাম টিকিটও করা যাবে। এ ছাড়া ভ্রমণিকায় বাস, জাহাজ ও উড়োজাহাজের কাউন্টারে যোগাযোগের তথ্যও রয়েছে। ট্রেনের সময়সূচি ও যাত্রার সময় রয়েছে অ্যাপে। সেখানে ক্লিক করে রেলওয়ের ওয়েবসাইটে আসা যাবে।
কক্সবাজারের সব ধরনের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, কটেজ, গেস্টহাউসের তথ্য ভ্রমণিকায় আছে। সেখানে হোটেল-রিসোর্টের ঠিকানা এবং যোগাযোগের নম্বর দেওয়া রয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, অ্যাপ ব্যবহার করে চাহিদা অনুযায়ী সহজে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, কটেজ, গেস্টহাউস খুঁজে নিতে পারবেন পর্যটকেরা। প্রাথমিকভাবে অ্যাপসে সব হোটেল অন্তর্ভুক্ত করা না থাকলেও পর্যায়ক্রমে সব হোটেল-মোটেলের তথ্য যুক্ত করার কাজ চলমান আছে।
সৈকতে ভ্রমণকালে ঘোড়ার পিঠে চড়া, বালুচরে বিচ বাইক রাইড, সমুদ্রের পানিতে দ্রুতগতির জলযান জেটস্কি রাইড, বালুচরের লকার সার্ভিস, সৈকতের ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রীসহ ভ্রমণসংক্রান্ত যেকোনো সেবা কোথায় কখন পাওয়া যাবে, তার বিস্তারিত তথ্য অ্যাপে দেওয়া আছে।
প্রতিদিনের জোয়ার-ভাটার সময় এবং আবহাওয়ার পূর্ভাবাস জানা যাবে এ অ্যাপে। পর্যটকদের সচেতনতার জন্য সৈকতের বিপজ্জনক পয়েন্টের তথ্যও অ্যাপে দেওয়া আছে। এ ছাড়া যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট, ট্যুরিস্ট পুলিশ, চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স, লাইফগার্ড-বিচ ভলান্টিয়ারদের মুঠোফোন নম্বর দেওয়া আছে অ্যাপে। সেখান থেকে সরাসরি ফোন করার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ভ্রমণে আসা পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য ভ্রমণিকা অ্যাপ খুবই প্রয়োজনীয়। ঘরে বসে পর্যটকেরা কক্সবাজারের সবকিছু জেনে নিতে পারছেন। হোটেল-পরিবহণ প্রভৃতির অগ্রিম টিকিট বুকিং দিতে পারছেন।