শিরোনাম
// শুভ ব্রত দত্ত //
বরিশাল, ২৮ মার্চ ২০২৫ (বাসস): বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার প্রাচীনতম স্থাপত্য কসবা মসজিদ। মসজিদটি অতি আকর্ষণীয় নয় গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটির সাথে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের অনেকাংশেই মিল রয়েছে। এটি বিভাগের বৃহত্তম প্রাচীন মসজিদ।
এ বিষয়ে একাধিক স্থানীয় সূত্র জানায়, বর্গাকার এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে পোড়ানো লাল ইট দিয়ে। মসজিদটির প্রতিটি বাহু ১৬.৯৬ মিটার দীর্ঘ। দেয়ালগুলো প্রায় ২.১৮ মিটার চওড়া। মসজিদের আয়তন প্রায় ১১.৬৮ মিটার দৈর্ঘ্য ১১.৬৮ মিটার প্রস্থ প্রতি গম্বুজের ভিত্তির নিচে পরস্পর ছেদকারী খিলানগুলোর চারটি ত্রিকোণাকার জায়গায় রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী বাঙালি পেন্ডেন্টিভ অলঙ্করণ। ভবনটির কার্ণিশ প্রচলিত বাঙালি রীতিতে কিছুটা বাঁকানো। মসজিদের চার কোনে রয়েছে ৪টি ছোট মিনার বা বুরুজ। এই বৃত্তাকার বুরুজগুলো ছাদ পর্যন্ত প্রলম্বিত।
স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, এ মসজিদটি নির্মাণের কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। তবে জনশ্রুতি রয়েছে, সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে জঙ্গলকে চাষাবাদের উপযোগী করার জন্য এক দল লোক পরিষ্কার করার সময় এই মসজিদটির সন্ধান পান। মসজিদের কোনো প্রতিষ্ঠাতা বা নির্মাণকারীর সন্ধান না পেয়ে তখন ওই এলাকার মুসলমানরা এর নাম রাখেন ‘আল্লাহর মসজিদ’। মসজিদটি বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এতে নিয়মিত নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে। মসজিদটিতে আসছে ঈদেও দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় প্রবীন বাসিন্দা মসজিদের খাদেম মিন্টু সরদার বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ঐতিহাসিক এ মসজিদের খাদেম হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমাদের পূর্ব-পুরুষ থেকে শুনে আসছি প্রায় সাত’শ বছর আগে এ মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। মসজিদটি নির্মাণের ব্যাপারে বিভিন্ন অলৌকিক কাহিনীর কথা বর্ণিত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে প্রবীন সাংবাদিক ও এ্যাড. নজরুল ইসলাম চুন্নু বাসস’কে বলেন, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক পুনর্গঠন ও সংস্কারের পরে বর্তমানে মসজিদটি বাংলার অন্যতম সু-সংরক্ষিত ইমারত হিসেবে চিহ্নিত এবং এখানে মুসল্লিরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, ঐতিহাসিক এ আল্লাহর মসজিদটি একনজর দেখতে প্রতি দিনই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে মানুষ। অনেক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এ মসজিদে এসে নফল নামাজ আদায় করেন। যথাযথ রক্ষনাবেক্ষণ হলে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে দীর্ঘ দিন টিকে থাকবে এ মসজিদ।