শিরোনাম
কুমিল্লা (দক্ষিণ), ১৬ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : জেলার মুরাদনগর উপজেলার সলফা গ্রামে বহুকাল থেকে সিদল তৈরি হচ্ছে। তাদের তৈরি এ সিদল দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারতে রপ্তানী হচ্ছে। সলফা গ্রামের কয়েকটি পরিবার তাদের বাপ-দাদার আদি এ পেশাকে এখনো ধরে রেখেছেন। এক সময় ওই গ্রামের ৪০টি পরিবার সিদল তৈরির কাজ করতো। তবে বর্তমানে তাদের অনেকে পেশা বদলে চলে গেছেন অন্য পেশায়।
উপজেলার সলফা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় সিদল শুকানোর কাজ করছেন রবীন্দ্র চন্দ্র ও বিষ্ণু চন্দ্র সরকার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিদল প্রস্তুুত করতে সময় পার করেন তারা। মল সূত্রধর বাসসকে বলেন, দুই জাতের সিদল তৈরি হয়। একটি হচ্ছে পোয়া অন্যটি পুঁটি মাছের। পোয়া মাছ চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করা হয়। পুঁটি মাছ মেঘনা ও সিলেট এলাকা থেকে আসে। পুঁটি মাছ আনার পর এগুলোর পেট কাটতে হয়। আমাদের এলাকার প্রায় ১০০ নারী প্রতিদিন এ কাজ করেন। মাছের পেট কেটে নিয়ে জাল দিয়ে তেল ওঠানো হয়। ওই তেল নারীদের কাছ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে কিনে রাখেন রবীন্দ্র চন্দ্র ও বিষ্ণু চন্দ্র সরকার। এরপর মাছগুলো মাচায় শুকানোর কাজ চলে। মাছ শুকানোর এক মাস পর মটকার ভেতর ঢুকানো হয়। তখন ওই তেল ব্যবহার করা হয়। মন্টু চন্দ্র সরকার আরো বলেন, বংশ পরম্পরায় আমরা এ কাজ করে আসছি। এক সময় নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় উন্মুক্ত থাকায় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এখন আর এলাকায় মাছ পাওয়া যায় না। মাছ সব কিনে আনতে হয়। বাজারে সিদলের চাহিদা থাকলেও পুঁজির অভাবে বেশি তৈরি করতে পারি না। আমাদের সিদল ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সিলেট, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। এছাড়া ভারতের আগরতলা এবং সোনামুড়ায় আমাদের কিছু পাইকার আছে। তারা এসে সিদল নিয়ে যান।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সলফা গ্রামের কয়েকটি পরিবার সিদল প্রস্তুুত করছে। যা দেশীয় চাহিদা মেটিয়ে ভারতেও রপ্তানী হচ্ছে।