শিরোনাম
ঢাকা, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, জিডিপিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ, যদিও তারা নানামুখী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। এ সমস্যা নিরসনে তিনি নীতিনির্ধারকদের নীতি সহায়তা বাড়ানো এবং রপ্তানি সম্ভাবানা কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘এসএমইদের রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধি; এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলাস এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. ফাইজুল ইসলাম।
ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে স্পিকারকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন সংগঠনের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সমীর সাত্তার।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে এবং তিনি এসএমই শিল্পের উন্নয়নে নিরলস কাজ করছেন। তিনি বলেন সকলকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের রপ্তানী সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন।
এসএমইদের জামানতবিহীন ঋণ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, তবে এ বিষয়ক তথ্যাদির যথাযথ প্রচার-প্রচারণার অভাবে কাঙ্খিত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ই-কমার্স এবং সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্য বেচা-কেনায় সুবিধা নিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক সক্ষমতা বাড়ানোর উপর তিনি জোরারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে সরকার প্রবর্তিত ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন’কে ব্যবহার করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তারা বর্তমানে জামানতবিহীন ১০ লাখ টাকার ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন। এছাড়াও এসএমইদের রপ্তানির পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান নির্ধারিত শুল্ক হার হ্রাসের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে স্পীকারকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন ব্যারিস্টার মোঃ সমীর সাত্তার।
অনুষ্ঠানে কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলাস বলেন, বাংলাদেশের কারিগরি ও ভোকেশন্যাল শিক্ষা ব্যবস্থা ও রপ্তানির উন্নয়নে কানাডা সরকার একযোগে কাজ করছে। বাণিজ্য সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় দেশসমূহের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রতি তিনি জোরারোপ করেন। তিনি বাংলাদেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ, বাজার সম্প্রসারণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি হারে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার উপর তিনি জোরারোপ করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, বাংলাদেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য, কারণ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারাই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে থাকে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের রয়েছে বহুমুখী ও শক্তিশালী রপ্তানিমুখী পণ্য সম্ভার এবং এদেশের উৎপাদিত পাটজাতপণ্য, চিংড়ি, ওষুধ, তৈরি পোষাক প্রভৃতির বর্হিবিশ্বে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ সময়ে শিক্ষা তথ্য-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে আরও বেশি হারে বিনিয়োগ বাড়ানোর উপর রাষ্ট্রদূত জোরারোপ করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সমীর সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা সংস্থা সানেম এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে তরঙ্গ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর ইয়াসমিন, পিপলস লেদার ইন্ডাস্ট্রি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজবিন বেগম, বেঙ্গল মিট প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আসিফ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (এসএমই-এসপিডি) ড. মো. কবির আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।