শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস) : চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর বিবরণী দাখিলের (রিটার্ন) সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে দেশে কর শনাক্তকরণ নাম্বারধারীর (টিআইএন) সংখ্যা ছিলো ৬০ লাখ, এখন সেটা ১ কোটি ২০ লাখ। ২০২০ সালে রিটার্ন দাখিল হয়েছিলো ২১ লাখ এখন সেটা ৩৯ লাখ হয়ে গেছে।আমরা আশা করছি চলতি বছরশেষে রিটার্ন ৪০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।’ তিনি আরও জানান, ২০২০ সালের ২ লাখ বিআইএন (ব্যবসা শনাক্তরকণ সংখ্যা) এখন সেটা ৫ লাখে উন্নতি হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল আমারিতে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয় রুপরেখা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তব্য তিনি একথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রিটার্ন দাখিল এবং টিআইএন ও বিআইএন এর সংখ্যা বাড়ানো গেছে কর প্রদান প্রক্রিয়া সহজ হওয়ার কারণে। সেটা আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস উভয়ক্ষেত্রে হয়েছে। এখন ঘরে বসে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করা যায় এবং ট্যাক্স সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য কর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। রিটার্ন দাখিলের সঙ্গে সঙ্গে ট্যাক্স সার্টিফিকেট পেয়ে যাচ্ছেন করদাতরা।
তিনি আরও বলেন, এনবিআর সবসময় ব্যবসা ও শিল্প প্রসারে সহায়তা করে যাচ্ছে। যে নীতি গ্রহণ করলে দেশে পণ্য উৎপাদন সহজ হয় আমরা সেই নীতি সহায়তা দিচ্ছি। যেমন কর-নীতি সহায়তার দেওয়ার কারণে এখন দেশে মটরসাইকেল তৈরি হচ্ছে। আমরা গতবছর লিফট খাতকে খুঁজে বের করেছি। আমাদের প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার কারণে দেশে এবছর লিফট তৈরি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রহমাতুল মুনিম মনে করেন মধ্যবিত্ত শ্রেণির চাহিদা অনুযায়ী দেশে পণ্য তৈরি করা সম্ভব হলে আমদানি ব্যয় অনেক কমে যাবে। তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত শ্রেণির অধিকাংশ পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। এই জনগোষ্ঠির পণ্যবাজার পুরোটা আমদানি নির্ভর পণ্যের দখলে। আমরা খুঁজে বের করার চেস্টা করছি মত্যবিত্ত শ্রেণির চাহিদাজনিত পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে কোন ধরনের সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। সেই অনুযায়ী নীতি সহায়তা দেওয়া হবে। এর ফলে দেশে কমংসংস্থান বাড়বে এবং দ্রুত শিল্পায়ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে কর-জিডিপির অনুপাত কম এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কর-জিডিপির অনুপাত কম। এতে আমি হতাশ নয়। যদি নেপাল কিংবা মালদ্বীপের সঙ্গে তুলনা করেন দেখবেন, তাদের রাজস্ব আয়ের বড় অংশ আসে পর্যটন শিল্প থেকে। পর্যটনে অনেক বেশি ভ্যালু এড করা যায়। কিন্তু আমাদের এ ধরনের রাজস্ব আয়ের উৎস্য কম।’
তিনি মনে করেন সরকার যে ঋণ নিচ্ছে সেটার নেতিবাচক কিছু না বরং ইতিবাচক। কারণ ঋণ নেওয়ার কারণে অর্থনীতি গতিশীল হয় এবং সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সম্পৃক্তকা বৃদ্ধি পায়, যা মূলত অর্থনীতিকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে।
তিনি দেশে কর-রাজস্ব আয়ের উৎস্য বাড়ানো এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।