শিরোনাম
// মনসুর আহম্মেদ //
রাঙ্গামাটি, ১৫জুন ২০২৪(বাসস): শেষ মুহুর্তে পাহাড়ে জমে উঠেছে কোরবানির পশুরহাট, হাটে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ কোরবানির পশু।
গত কয়েকদিন ধরে পাহাড়ী এলাকা থেকে শত-শত বোটে করে শহরের পৌরসভা ট্রাক টার্মিনালে আসছে এসব পশু। পৌরসভার পশুর হাটের মাঠ পেরিয়ে হাজারো কোরবানি পশু রাস্তাসহ বোটে করে কাপ্তাই লেকে অবস্থান করছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। পর্যাপ্ত পরিমাণ কোরবানি পশুর মজুদ থাকায় দামও হাতের নাগালে থাকবে বলে আশা সাধারণ ক্রেতাদের।
পাহাড়ি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় পাহাড়ের বিভিন্ন স্থান থেকে পশু সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলার পৌরসভা ট্রাক টার্মিনালসহ লংগদু,বাঘাইছড়ি,বিলাইছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় বসেছে কোরবানির পশুরহাট। এ ছাড়াও পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায়ও বসেছে বিচ্ছিন্ন পশুর হাট।
কোরবানি উপলক্ষে স্থানীয় জনসাধারণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকার ব্যবসায়ীরা এসে পাহাড়ী পশু সংগ্রহ করছেন এবং সংগ্রহ করে ঢাকাসহ দেশের বড়-বড় হাটগুলোতে নিয়ে যাচ্ছেন।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার ইজারাদার মো. রুহুল আমিন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস)বলেন, রাঙ্গামাটিতে গত কয়েকদিন থেকে কোরবানির পশুরহাট জমে উঠেছে। আসন্ন ‘কোরবানির ঈদ’কে সামনে রেখে রাঙ্গামাটির পাহাড় থেকে শত-শত গরু আনা হয়েছে শহরের হাটে। তিনি জানান,পাহাড়ি গরুগুলোও স্বাভাবিকভাবে মোটাতাজা এবং এসব গরুকে কোন কৃত্রিম ওষুধ প্রয়োগ করা হয় না বলে এখানকার পশুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয়রা ছাড়াও বাইরে থেকেও ক্রেতারা কোরবানি পশু ক্রয় করতে রাঙ্গামাটিতে আসছেন। সহজেই ক্রেতাদের মন কাড়ছে রাঙ্গামাটির কোরবানি পশুরহাটে ওঠা এসব পাহাড়ি গরু। এবার কোরবানিতে পশুর মুল্য ক্রেতার নাগালের মধ্যে রয়েছে বলে জানান তিনি।
রাঙ্গামাটি শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনালে কোরবানী পশুর হাট স্থাপন করেছে পৌরসভা। এছাড়া রাঙ্গামাটির বরকল, লংগদু, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর উপজেলাসহ বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকা থেকে কাপ্তাই হ্রদের নৌ-পথ দিয়ে প্রতিদিন ইঞ্জিন নৌকা ভর্তি করে পাহাড়ি গরু কোরবানির পশুরহাটে আসছে।
শহরে পৌরসভা কোরবানি পশুরহাটে গরু কিনতে আসা ব্যাক্তি মঈনুদ্দিন বাসসকে বলেন, এ বছর হাটে ছোট, বড়, মাঝারি সবধরনের পর্যাপ্ত পরিমাণ কোরবানি পশু রয়েছে, আশাকরছি এবারো ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে কোনবানি পশু নিতে পারবো।
জেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ, কে, এম, ফজলুল হক বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) বলেন, কোন ধরনের মোটা-তাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই পাহাড়ি এসব গরু বনে পাহাড়ে স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠায় দেখতে বেশ হৃষ্টপুষ্ট। এসব গরু ব্যাপকভাবে আসতে থাকায় বাজারে এবারো কোরবানির পশুর কোন সঙ্কট তৈরি হবে না। তিনি জানান, রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলায় সর্বমোট গবাদি পশুর প্রাপ্যতা ৬৪হাজার ৯৯৮টি এবং চাহিদা রয়েছে ৫৯ হাজার ৯৪৬টি এবং উদ্বৃত্ত রয়েছে ৫হাজার ৫২টি গবাদি পশু। তিনি জানান- কোরবানির পশুরহাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল সেবা প্রদান কার্যক্রম নির্বিঘেœ পরিচালনার জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগ সব রকম সহায়তা দিচ্ছে। রাঙ্গামাটির কোরবানির পশুরহাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম তদারকি করার জন্য টিম গঠন করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। কোরবানির পশুর হাট তদারকি করার জন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগের উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা নির্ধারিত হাটে দায়িত্ব পালন করছেন।
এবার কোরবানি উপলক্ষে সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য জেলা উপজেলার প্রতিটি কোরবানি পশুরহাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মো. জাহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, ক্রেতা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায়, জাল টাকার ব্যবহার রোধসহ সবধরণের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।পশুরহাটের নিরাপত্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।