শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের শ্রমিক শ্রেণী গত এক দশক বা তারও বেশি সময় ধরে তাদের মজুরির ন্যায্য অংশ পায়নি।
আজ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কমিটির প্রধান অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, আলোচনার মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশে গত এক দশক বা তারও বেশি সময়ে বা সাম্প্রতিক অতীতে যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে, শ্রমিক শ্রেণী তাদের ন্যায্য মজুরি পায়নি।
শ্রমিকনেতারা বৈঠকে অভিযোগ করেন, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি যথেষ্ট হয়নি। পাশাপাশি বাসস্থান, মাতৃত্বকালীন সুবিধা এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। অনেক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন গঠনেও নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন। এছাড়া শিল্পকারখানা বন্ধ থাকা এবং তা পুনরায় চালু না হওয়া শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য শ্রমিকদের এই অভিযোগ আমলে নিয়ে বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষায় যা কিছু করা প্রয়োজন, আমরা তা বিবেচনা করব। এছাড়া তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে বলে শ্রমিক নেতারা মত প্রকাশ করেন। শ্রম আইনকে বৈশ্বিক মানদ- অনুযায়ী যুগোপযোগী না করায় দেশে প্রায়ই শ্রম অধিকার লঙ্ঘিত হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির কাজ সম্পর্কে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রথমে কমিটির কাজের পরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। সদস্যরা কে কোন কাজ করবেন, তা বণ্টন করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি পরিসংখ্যানের যথার্থতা যাচাইয়ে তথ্য ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, যেমন আজ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হলো।
এছাড়াও, তিনি বলেন, আগামী দিনে বিদেশী বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে খাতভিত্তিক আলোচনা করা হবে এবং তা থেকে পাওয়া তথ্যগুলো প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এছাড়াও আমরা ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং সিলেটেও আলোচনা সভা করব। সকল অংশীজনের মতামত গ্রহণের পর তিন মাসের মধ্যে শ্বেতপত্রের খসড়া তৈরি হবে বলে জানান তিনি। খসড়া প্রতিবেদন তৈরির পর প্রধান উপদেষ্টা এবং পরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন,‘"আশা করি, আমরা তিন মাসের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রতিবেদনটি সরবরাহ করতে সক্ষম হব।
শ্বেতপত্রে সামষ্টিক অর্থনীতির পাশাপাশি খাতওয়ারি পরিস্থিতিও পর্যালোচনা করা হবে। যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, ব্যাংকিং, কর আহরণ, অর্থ পাচার, মেগা প্রকল্প, দারির্দ্য ও বৈষম্য প্রভৃতি।