বাসস
  ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:১৩

ব্যবসায়িক খাতের জন্য রেগুলেটরি সংস্কার কমিশন গঠনে সিপিডি’র গুরুত্বারোপ

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): ব্যবসা-সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিতকরণে ও দেশে ভাল ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করার উপায় খুঁজতে একটি রেগুলেটরি সংস্কার কমিশন গঠনের উপর গুরুত্বারোপ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ(সিপিডি)। 

দেশে ব্যবসায়িক একটি উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সমস্যা চিহ্নিত ও তা সমাধানের বিষয়ে মতবিনিময়ের জন্য একটি ‘উন্নত ব্যবসায়িক ফোরাম’ গঠনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সিপিডি আজ নগরীর ব্র্যাক সেন্টার ইন মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ সংস্কার: অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এজেন্ডা’ শীর্ষক সংলাপে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে।

সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত অধ্যাপক লুৎফে সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান (জ্যেষ্ঠ সচিব) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। 

বক্তৃতায় লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো চাইলে দেশের বেসরকারি খাতের জন্য একটি সংস্কার কমিশন গঠন করা হবে।

তিনি বলেন-এখন বেসরকারী খাতের জন্য কোন সংস্কার কমিশন নেই। যদি বাণিজ্য সংস্থাগুলো থেকে এই ধরনের সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আসে, এটি গঠনের জন্য আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করব।

বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আমলাতান্ত্রিক লাল ফিতা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এগুলো কমাতে কাজ করছে।
তিনি বলেন- ভাল করছে এমন দেশগুলোর অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা একটি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির জন্য কাজ করছি। আমাদের সঙ্গে তাদের চ্যালেঞ্জগুলো শেয়ার করার জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা আছে। আমরা জুম কলের মাধ্যমেও আলোচনা করতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অবশ্যই দূর করতে হবে। 

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব স্মল অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের সভাপতি মির্জা নুরুল গনি শোভন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল।

বিশিষ্ট আলোচক ছিলেন- বিডিজবস ডটকম লিমিটেডের নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর ও পিকার্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমৃতা ইসলাম।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে সিপিডি শেখ হাসিনার শাসনামলে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পরিচালিত একটি জরিপও প্রকাশ করে।

জরিপ অনুসারে,ব্যবসায় প্রায় ১৭ শতাংশ দুর্নীতি চিহ্নিত হয়েছে, এটি ২০২৪ সালের জন্য প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

জরিপে ব্যবসায়গুলো বিনিময় হারের অস্থিরতাকে দ্বিতীয় বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছে, তারপরে অদক্ষ সরকারি আমলাতন্ত্র, মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থায়নের সুযোগ-সুবিধা সংকোচিত করেছে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিগত শাসনামলে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক কার্যক্রম কয়েকটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মধ্যে কেন্দ্রীভূত ছিল।
তিনি বলেন, নীতি, আইন, প্রতিষ্ঠান এবং কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য সংস্কারের অনুপস্থিতি একটি অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।

মোয়াজ্জেম দেশের জন্য একটি সুস্পষ্ট উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির আহ্বান জানান যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এবং বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করবে। তিনি বলেন- ডিজিটাইজেশন ও আইটি সেক্টরের উন্নয়নে বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা নিয়ে আসে।