বাসস
  ২১ নভেম্বর ২০২৪, ২০:২৪

যুক্তরাজ্যের প্রায় আড়াই শ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ করছে : এইচএসবিসি

ঢাকা, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশে অবস্থিত হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) লিমিটেড জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের ২৪০টিরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে টেক্সটাইল ও ব্যাংকিং থেকে শুরু করে শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করছে।

ব্যাংকটি যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ বাজারের উপর গবেষণায় ‘নেভিগেটিং নিউ অপরচুনিটি : এনালাইসিস অফ দ্য ইউকে-বাংলাদেশ ট্রেড ডাইনামিক্স’ শিরোনামে প্রকাশিত সমীক্ষায় এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের উদযাপনে এইচএসবিসি কর্তৃক অনুমোদিত এবং আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং এলএলপি বাংলাদেশ এবং কোয়ে এশিয়া যৌথভাবে এই গবেষণাটি পরিচালনা করে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে শুরু হওয়া এই সমীক্ষাটিতে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহ তুলে ধরা হয়।

এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। 

ব্রিটিশ হাইকমিশনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক পরিচালক ড্যান পাশা, ইউনিলিভার বাংলাদেশের পার্টনারশিপ অ্যান্ড কমিউনিকেশননের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক শামীমা আক্তার, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশাদ একরামুল্লাহ, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং, এলএলপি পার্টনার শুচি ত্রিবেদী, কোয়ে এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শায়লা রহমান, কোয়ে এশিয়া পরিচালক, ফিলিপ চৌধুরী, এইচএসবিসির এশিয়া প্যাসিফিকের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটস’র রিজিওনাল হেড অব কমার্শিয়াল ব্যাংকিং স্টুয়ার্ট রজার্স এবং এইচএসবিসি বাংলাদেশের সিইও মো. মাহবুব উর রহমান ছাড়াও অনুষ্ঠানে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা ও ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণায় যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে আরও টেকসই এবং প্রসারিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব জোরদার করার জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।

এতে ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তৈরি পোশাকের বাইরে বাংলাদেশের রপ্তানি ভিত্তিকে বহুমুখী করার সুপারিশ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে গভীর সংহতকরণের জন্য অপরিহার্য হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এটি এলডিসি পরবর্তী যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করবে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহজ করতে বন্দর, লজিস্টিক এবং ডিজিটাল ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও প্রতিবেদনে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এই সমন্বয়মূলক অংশীদারিত্ব বজায় রাখার জন্য নিয়ন্ত্রক কাঠামো সহজতর করা এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দক্ষতা বিকাশকে উৎসাহিত করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

লুৎফী সিদ্দিকী তার বক্তৃতায় বলেন, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশ সংস্কারের যাত্রা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার সব সময় দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যারা বাংলাদেশে আসতে বা রপ্তানি করতে চায় তাদের সহায়তা করবে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু। দুই দেশের জন্য বিদ্যমান সুযোগগুলো কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়ায় আমি এইচএসবিসিকে ধন্যবাদ জানাই।

সারাহ কুক বলেন, আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশ যখন স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) অবস্থা থেকে উত্তরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সামনের কৌশলগত সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

হাইকমিশনার বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের ডেভেলপিং কান্ট্রিজ ট্রেডিং স্কিম (ডিসিটিএস) যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার বজায় রাখতে সহায়তা করবে এবং ইলেকট্রনিক্স এবং ইলেকট্রিক্যাল, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়াজাত পণ্য এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো উচ্চ-মূল্যের খাত বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

তিনি আরো বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে পারব, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে পারব এবং একটি স্থিতিশীল বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারব যা যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ উভয়কে লাভবান করবে।’