শিরোনাম
ঢাকা, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের জীববৈচিত্রের ক্ষতি, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন- এই তিন সংকটের প্রভাব মোকাবিলার জন্য একটি রোডম্যাপ উপস্থাপনের মাধ্যমে তার ‘পরিবেশ কর্ম-পরিকল্পনা ২০২৪-২০৩০’ চালু করেছে।
পরিকল্পনাটির অধীনে এডিবি’র লক্ষ্য হচ্ছে- পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ ও মূলধারার পরিবেশকে প্রাসঙ্গিক কর্মকান্ড ও বিনিয়োগে পরিণত করার মাত্রা ও সুযোগেকে প্রসারিত করে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নত জীবিকার বাহন হিসাবে পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণের কাজ করা।
এডিবি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরিকল্পনাটির তিনটি সংযুক্ত স্তম্ভ রয়েছে। এগুলো হলো- জীববৈচিত্র ও ইকোসিস্টেম ব্যবস্থাপনা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও চক্রাকার অর্থনীতি এবং প্রকৃতি-ভিত্তিক জলবায়ু সমাধান। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য, প্যারিস চুক্তি ও কুনমিং-মন্ট্রিল বৈশ্বিক জীববৈচিত্র কাঠামোর সমর্থনে এডিবি’র প্রতিশ্রুতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
এডিবি’র পরিবেশ পরিচালক ইয়োকো ওয়াতানাবে বলেন, ‘পরিবেশ কর্ম পরিকল্পনা একটি টেকসই ও স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যত গড়ার লক্ষ্যে তার উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোকে সহায়তার দিক নির্দেশনা দিতে এডিবি’র প্রতিশ্রুতিকেই প্রতিফলিত করে।’ তিনি বলেন, ‘প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল এ অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক অর্থনীতির সাথে ইকোসিস্টেম রক্ষা করা- শুধুমাত্র একটি পরিবেশগত বাধ্যতামূলকই নয়, বরং এ অঞ্চলের স্থানীয় ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়ন ও উন্নত জীবিকা অর্জনের পথও।
ধারনা করা হয়, ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার বা এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের অর্থনীতির ৫৩% এরও বেশি জীববৈচিত্র ও প্রকৃতিগত পণ্য ও পরিষেবাগুলোর ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। এছাড়াও ২০৩০ সালের মধ্যে পরিবেশ-বান্ধব ব্যবসায়িক মডেলগুলো এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২৩২ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বার্ষিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার অর্জনের দ্বার উন্মুক্ত করতে পারে।
পরিবেশ কর্ম পরিকল্পনার কর্মকান্ডের রূপরেখাও দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে, এডিবি পরিবেশগত ডায়াগনস্টিকস উন্নত করা ও দেশের অংশীদারিত্বের কৌশলগুলোর সাথে পরিবেশগত অগ্রাধিকারগুলিকে একীভূত করার দিকে মনোনিবেশ করবে।
মাঝামাঝি সময়ে, এটি একটি সক্ষম পরিবেশ গড়ে তুলতে ও পরিবেশগত লক্ষ্যগুলোকে সমর্থন করার মতো প্রকল্পগুলোর একটি পাইপলাইন তৈরি করতে নীতিগত পদক্ষেপগুলিকে সমর্থন করবে।
চূড়ান্ত পর্যায়ে, এডিবি মূল্যায়ন করবে, প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ও শক্তিশালী অংশিজনদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে টেকসই ফলাফল তৈরিতে সরকারী ও বেসরকারী খাতকে নিয়োজিত করবে।
সুষম ইকোসিস্টেম সুরক্ষা ও পুনরুদ্ধার হচ্ছে- জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজন এবং পৃথিবীর জরুরি অবস্থার সমাধানের মূল চাবিকাঠি। সুষম ইকোসিস্টেম, বিশেষ করে বন ও মহাসাগর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অর্থনীতি ও সমাজকে মূল্যবান পরিষেবা প্রদান করে।
কর্মপরিকল্পনাটি আঞ্চলিক জলবায়ু ব্যাংক হিসেবে এডিবি’র অবস্থানকে সমর্থন করবে এবং ২০১৯ সাল থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রশমন ও অভিযোজন উভয়ের জন্যই ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি জলবায়ু অর্থায়নে পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতিতে অবদান রাখবে।
এডিবি চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে একটি সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক ও টেকসই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবি’র সদস্য রাষ্ট্র ৬৯টি। এর মধ্যে ৪৯টি রাষ্ট্রের অবস্থান এ অঞ্চলে।