বাসস
  ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫০

শেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কফি চাষ

শেরপুর, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : জেলার সমতল অঞ্চলে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে কফি চাষ। এদিকে ফসল হিসেবে কফি চাষে মিলছে ভালো ফল।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাষের পরিধি বাড়লে আগ্রহী কৃষকদের বিপণনসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।

প্রথম বারের  মত কফি চাষ করা কৃষি উদ্যোক্তা কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসাইন তুলিপ জানান, ২০২১ সালে বান্দরবানে চাকরির সুবাদে কফি চাষের অভিজ্ঞতা নেন তিনি। এরপর শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২৫০টি কফির চারা নিয়ে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন। সফলতা দেখে ২০২২ সালে রোপণ করেন ১ হাজার কফি চারা। এখন তার ৩ বিঘা জমিতে রয়েছে ৮০০টি কফি গাছ।

কফি চাষী কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসাইন তুলিপ আরো বলেন, আমার খামারে ‘৬ থেকে ৭শ’ গাছ রয়েছে যেগুলো থেকে ফল সংগ্রহ করে আমি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছি। পাশাপাশি আমার এ খামারে এখনো ২০ হাজারের মতো চারা আছে। এছাড়া শেরপুরের ৫ উপজেলা ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি জেলার কৃষকদের মাঝে ৫০ হাজার কফি চারা বিনামূল্যে বিতরণ করেছি।

কফি চারা রোপণের ২ বছর পর ফল দিতে শুরু করে এবং এটি টিকে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে চেরি ফল সংগ্রহের পর পালপিং, রোদে শুকিয়ে পার্চমেন্ট করে বাদামের মত অংশ বের করে এবং রোস্টিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় রোস্টেড কফি বিন।

একটি পরিপক্ব গাছ থেকে বছরে ৫ থেকে ৬ কেজি চেরি ফল পাওয়া যায়। যা থেকে ১ কেজি রোস্টেড বিন তৈরি হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ২ হাজার টাকা। বাড়ির পতিত জমি বা ছায়াযুক্ত স্থানে কফি গাছ রোপণ করা যায়।

বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কফি আমদানি করা হয়। দেশে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ সফল হলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে এ ফসল।

শেরপুরের কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাখাওয়াত হোসাইন বাসস'কে বলেন, কফি চাষের উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া এখানে রয়েছে। সেই অনুযায়ী কৃষকদের কফি চাষের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শেরপুরের শ্রীবরদি, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকার সমতল ভূমিতেও কফি চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তাই কফি চাষে আগ্রহী কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা আশ্বাস দেন জেলা কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা।