বাসস
  ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:২৮

মাতার বাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ৬ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাইকা

কাসেম মাহমুদ

ঢাকা, ৫ এপ্রিল, ২০২৫(বাসস) : দেশের নিরাপদ খাদ্য এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) সরকারকে ৬ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সুত্র জানায়, সহজ শর্তে ৩০ বছরে পরিশোধযোগ্য এই ঋণ প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। এই লক্ষ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশ সরকারের সাথে দু’টি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যার মোট পরিমাণ জাপানী মুদ্রায় ৮৫ হাজার ৮১৯ মিলিয়ন ইয়েন, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৬ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিরাপদ খাদ্য প্রকল্পের জন্য ২৮ হাজার ৬৯৯ মিলিয়ন ইয়েন এবং মাতার বাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ৫৭ হাজার ১২০ মিলিয়ন ইয়েন।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গবেষণা কর্মকর্তা মো. তাইফ আলী বাসস’কে জানান, গত ২৫ মার্চ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এই দু’টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং জাইকার চীফ রিপ্রেজেনটেটিভ তুমুহিদে ইচিগুচি নিজ নিজ সরকার ও সংস্থার পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

তাইফ আলী জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে গত ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেকে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। ইতোমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় আগামী সপ্তাহের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ডিমান্ড নোট প্রকাশ করে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি অর্থবছরেই চুক্তির টাকা ছাড় করিয়ে কাজ শুরু করা হবে।

তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ফুড সেফটি টেস্টিং ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে ২৮ হাজার ৬৯৯ মিলিয়ন ইয়েন ব্যয়ে বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথোরিটি (বিএফএসএ)-এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। যা ঢাকা, চট্টগ্রাম, ও খুলনার মত প্রধান বিভাগগুলোতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে।

অপরদিকে, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ড সুত্র জানায়, ‘মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট-৮ এর জন্য জাইকা ৫৭হাজার ১২০ মিলিয়ন ইয়েন ঋণ দিচ্ছে। উক্ত প্রকল্পের শক্তির নির্ভরযোগ্যতা বাড়াতে এবং জ্বালানি উৎসগুলোর বৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে এই ঋণ সহায়তা হচ্ছে। যার আওতায় ১২শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ৪শ’ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন, রাস্তা, সেতু এবং একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পগুলো বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য ও বিদ্যুৎ বিতরণে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের ভবিষ্যত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ফুড সেফটি টেস্টিং ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় একটি ফুড সেফটি রেফারেন্স ল্যাবরেটরি ভবন, খাদ্য পরীক্ষাগার কক্ষ, প্রশিক্ষণ ভবন, অফিস ভবন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় সক্ষমতা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে খাদ্য নিরাপত্তা পরীক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে যৌথভাবে কাজ করবে জাইকা এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। এই প্রকল্পের ঋণের সুদের হার নির্মাণ কাজের জন্য ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ ও পরামর্শক সেবার জন্য শুন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর।

মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিকাল কোল ফায়ারড পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। যেখানে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ৪শ’ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন, সড়ক ও সেতু। এই প্রকল্পের অষ্টম কিস্তির হার নির্মাণ কাজ ও যন্ত্রপাতির জন্য ১ দশমকি ৯৫ শতাংশ ও পরামর্শক সেবার জন্য শুন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর।