বাসস
  ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ২১:৩৬

বাজেটে হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক কমানোর দাবি বারভিডা’র

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা’র সভাপতি আবদুল হক বক্তব্য দেন। ছবি : বারভিডা

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : আসন্ন ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে মাইক্রোবাস ও হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)।

বারভিডা জানায়, হাইব্রিড গাড়ি মধ্যবিত্ত শ্রেণির নাগালের মধ্যে আনতে হলে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শুল্ক কমানো দরকার, একই সঙ্গে গণপরিবহন হিসাবে মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার প্রয়োজন।

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন বারভিডা’র সভাপতি আবদুল হক। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল এবং কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বারভিডা’র সভাপতি বলেন, বিগত কয়েক বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধির ফলে ভোক্তার চাহিদা থাকা সত্ত্বেও দেশে রিকন্ডিশন্ড যান আমদানি ও বিক্রি হ্রাস পেয়েছে। এ প্রেক্ষিতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাত একটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ পরিস্থিতিতে, তাই ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে যথাযথ নীতি সহায়তা দরকার।

বারভিডা’র সভাপতি বলেন, মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় গত কয়েক বছরে দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানি ও বিক্রয় লক্ষণীয় হারে কমেছে। বর্তমানে হাইব্রিড গাড়ির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির ওপর নির্ভর করে ২০ থেকে ৩৫০ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়। তবে বারভিডা এই শুল্ক কত শতাংশ কমানো উচিত, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো হার প্রস্তাব করেনি।

সংগঠনটি মাইক্রোবাস আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারেরও সুপারিশ করেছে। বর্তমানে ১৮০১ সিসির বেশি মাইক্রোবাস আমদানিতে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, অ্যাম্বুলেন্স জীবন রক্ষাকারী বাহন হলেও এর আমদানিতে বর্তমানে শুল্কের পাশাপাশি ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দিতে হয়। বারভিডা এই ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

এছাড়া দেশে ইলেকট্রিক, হাইব্রিড, প্ল্যাগ-ইন হাইব্রিড এবং হাইড্রোজেন চালিত গাড়ি আমদানি ও ব্যবহারের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য ও সুসংগঠিত নীতিমালা প্রণয়নেরও আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি নতুন ও পুরোনো গাড়ির শুল্কায়নে এবং নিবন্ধন ফি নির্ধারণে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার দাবি করেছে বারভিডা।

সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সিসি ভিত্তিক পদ্ধতিতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির নিবন্ধন ফি নতুন গাড়ির তুলনায় ২৭ হাজার ৫০৮ টাকা থেকে ৫৩ হাজার ৯৫৮ টাকা পর্যন্ত বেশি নির্ধারিত। বারভিডা’র নেতারা আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন বাজেটে এসব সুপারিশ বিবেচনায় নিলে সাধারণ মানুষের জন্য গাড়ি ক্রয় সহজ হবে এবং সার্বিকভাবে বাজারে গতিশীলতা ফিরবে।

সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা সভাপতি বলেন, প্রায় ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে বারভিডা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জাপানের বিশ্বখ্যাত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে দেশের পরিবহন খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তিনি বলেন, বারভিডা সদস্যবৃন্দ যেভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তা এক ধরনের স্যোশাল বিজনেস, যেখানে কোন মনোপলি নেই। দেশের পরিবহন খাতের সুষ্ঠু বিকাশে সহযোগিতা প্রদান, গাড়ি আমদানি ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ায় বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মস্থান এর পাশাপাশি এতে  ভোক্তাদের বহুমুখী চাহিদা পূরণ হচ্ছে এবং সরকারও রাজস্ব প্রাপ্তির মাধ্যমে সুফল পাচ্ছে। অর্থাৎ এখানে একটা বড় অর্থনীতি জড়িত। অপরদিকে দেশে নতুন গাড়ি আমদানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে গুটিকয় ডিলার থাকায় এক্ষেত্রে মনোপলি কাজ করছে।

বারভিডা আমদানিকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি এবং দেশে আমদানি করা নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি’র মধ্যে বিআরটিএ’তে যথেষ্ট বৈষম্য রয়েছে। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি বেশি হওয়ায় বারভিডা এ বৈষম্য দূর করার জোর দাবি জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বারভিডা সভাপতি আরো বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব হাইব্রিড গাড়িগুলোর সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্ক হার পুনর্বিন্যাস করা হলে এসব গাড়ি আমদানি সহজলভ্য হবে এবং বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারে রাজস্ব আয় বাড়বে।