শিরোনাম
॥ শাহাদুল ইসলাম সাজু ॥
জয়পুরহাট, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩(বাসস) : অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দারিদ্র্যতাকে জয় করে সফল খামারি ও ব্যবসায়ীর খাতায় নাম লিখেছেন জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল শ্রীপুর গ্রামে বসবাস করা মোস্তাফিজুর রহমান।
দারিদ্র্যতাকে জয় করা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মাদ্রসা লাইনে পড়া লেখা শুরু করলেও পরিবারের অভাব অনটনের কারণে তা বেশি দূর করা সম্ভব হয়নি। কিছু একটা করার ইচ্ছা শক্তি থেকেই ছাত্র জীবনের জমানো কিছু টাকা দিয়ে প্রথমে পাশের নুনুজ বাজারে কৃষিপণ্য কেনা বেচা শুরু করেন । সেখান থেকে টাকা জমিয়ে ২০০৭ সালে নুনুজ বাজারে ৯ শতাংশ জমি কিনে শুরু করেন সার ও কীটনাশকের ব্যবসা। এ ব্যবসার আয় থেকে ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ জমির উপর গড়ে তোলেন মায়া এন্ড মিশু ডেইরি এগ্রো ফার্ম নামে স্বপ্নের গাভী পালন খামার। প্রথমে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি গাভী কিনে খামারের কার্যক্রম শুরু করলেও বর্তমানে দেশী-বিদেশী গাভীর সংখ্যা হচ্ছে ৫৯টি। যার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। গরুর খামার দেখে কালাই উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে প্রাণি সম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেওয়া হয়েছে মিল্ক ক্রিম সেপারেটর মেশিন। নিজের দুধসহ আশপাশের থেকে দুধ সংগ্রহ করে মিল্ক ক্রিম সেপারেটর মেশিনের সাহায্যে ক্রিম আলাদা করে সেই দুধ বাজারে বিক্রি করা হয়। আলাদা করা ক্রিম থেকে তৈরি করা হয় নানা দুগ্ধজাত পণ্য। গাভীর খামারকে কেন্দ্র করে প্রায় ৬ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের পান চং ঘাসের চাষ করছেন। নিজের খামারে থাকা গরু মোটাতাজা করনে ওই ঘাস খাবারের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া বাইরে ওই পান চং গাস বিক্রি করেও টাকা আয় করে থাকেন মোস্তাফিজুর রহমান। গরুর খামারের পাশাপাশি নুনুজ বাজারে সার ও কীটনাশকের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। গরুর খামার ও ব্যবসা পরিচালনায় মোস্তাফিজুর রহমানের বর্তমানে পাঁচ জন কর্মচারী কাজ করেন। প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম বলেন, জিরো থেকে হিরো মোস্তাাফিজুর রহমান এখন সফল খামারি। অদম্য ইচ্ছা শক্তি তাকে সফলতা এনে দিয়েছে বলে জানান অন্যান্য প্রতিবেশীরা। এলাকায় সফল খামারি হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান এখন অনুকরণীয় বলে জানান, প্রতিবেশী একরাম হোসেন ও সহিদুল ইসলাম। কালাই উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা হাসান আলীর জানান, সফল খামারি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান অত্যন্ত পরিশ্রমি একজন খামারি। তাকে গাভী পালনে মিল্ক সেপারেটর মেশিন দেওয়া হয়েছে এবং সব সময় খোঁজ খবর রাখা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে বলেও জানান তিনি।