বাসস
  ০৯ মে ২০২৩, ১৯:০৯

অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য প্রত্যেকটি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে : স্পিকার

ঢাকা, ৯ মে, ২০২৩ (বাসস) : জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কাঙ্খিত সামাজিক অগ্রগতির প্রয়োজন। সেজন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। 
তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেকটি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। 
আজ রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে ‘দক্ষিণ এশিয়ার সামাজিক ক্ষেত্রের উন্নয়নের উপর ১১তম অর্থনৈতিক পলিসি নেটওয়ার্ক ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার এ কথা বলেন। বিশ্বব্যাংক এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি অব গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (বিআইজিডি) যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সায়েক এবং বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন বক্তব্য দেন। 
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী  বলেন, সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তিকে সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। জীবন মানের উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বৈষম্য ও দারিদ্র্য দূর করা জরুরি। 
তিনি বলেন, বৈষম্য নিরসনে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা দূর করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাহলেই দেশের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত হবে। 
স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক অগ্রগতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষকের জন্য ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট, মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি, আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামারসহ নানাবিধ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড গ্রহণ করেছেন। আইসিটি ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে তরুণ প্রজন্ম ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন। 
‘আসুন আমরা এক সাথে এমন একটি বিশ্ব তৈরি করি যা দারিদ্র্য, ক্ষুধা, যুদ্ধ এবং মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে পারে এবং মানবতার কল্যাণের জন্য বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন করতে পারে।’- জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে স্পিকার বলেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের পূর্ণ সুবিধা নিতে নারী-পুরুষ সকলকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হতে হবে। তাহলেই টেকসই সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। 
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সায়েক বলেন, সমাজের উচ্চ এবং কম সুযোগ পাওয়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যবধান ঘোচাতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, বিশেষ করে শিক্ষা খাতে। তবে এক্ষেত্রে আরও অনেক কিছু করার বাকী আছে। তিনি মনে করেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য কমাতে অব্যশই কাজ করে যেতে হবে। কারণ কর্মসংস্থান, উপার্জন, ভোগ এবং কল্যাণমূলক কর্মসূচি এই বৈষম্য পরিচালিত করছে।’ 
সম্মেলনের প্রথম দিনের আলোচনায় তুলে ধরা হয়, গত দুই দশকে দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৫০ মিলিয়ন মানুষকে চরম দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে এবং একইসাথে জীবনযাত্রার মানের উন্নতি করেছে। তবে এই প্রবৃদ্ধি সকল জনগোষ্ঠীকে সমানভাবে কল্যাণ করেনি, যার ফলে সামাজিক অগ্রগতিতে এখনও পিছিয়ে রয়েছে। 
সম্মেলনে শিক্ষাবিদ এবং গবেষকরা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কীভাবে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য এই অঞ্চলে তার উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাঁধা হিসেবে কাজ করছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সম্মেলনের প্রথম দিনে তিনটি পৃথক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ, গবেষক ও উন্নয়নকর্মীরা অংশগ্রহণ করেছেন।