বাসস
  ১৫ জুলাই ২০২৩, ১১:৩১

গোপালগঞ্জে গত মাস ৪শ কোটি টাকার পশু বিক্রি হয়েছে

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১৫ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : গোপালগঞ্জে  গত মাসে ঈদুল আযহার সময় রেকর্ড পরিমান  কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে । এ জেলায় অন্তত ৪ শ’ কোটি টাকার পশু বেচা-কেনা  হয়েছে। পশু ক্রয়-বিক্রির সাথে সংশ্লিষ্টরা ১শ’ কোটি টাকা আয় করেছেন। রেকর্ড পরিমান পশু বিক্রির কারণে জেলার ৫ উপজেলায় ৫৮ হাজার ৪০৪ টি পশু কোরবানি করা হয়।  প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর  জেলায় ৩০ হাজার ২৪৩ টি পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এ  জেলায় ২৮ হাজার ১৬১ টি বেশি পশু কোরবানি করা হয়েছে। এ কারণে গোপালগঞ্জ  বেশি পশু ক্রয়-বিক্রি হয়েছে। জেলাবাসী পবিত্র ঈদুল আযহার দিন উৎসব মুখর পরিবেশে পশু কোরবানি করেছেন। তাই  এ জেলায় কোরবানি কেন্দ্রীক  গ্রামীণ অর্থনীতি  এখন বেশ চাঙ্গা।
প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সরদার বলেন,  এ জেলায় ৩০ হাজার ২৪৩ টি পশু কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু পশু কোরবানি হয়েছে  ৫৮ হাজার ৪০৪টি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এ জেলায় ২৮ হাজার ১৬১টি বেশি পশু কোরবানি করা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৯১টি ষাঁড়/ বলদ, ৭৬৫টি গাভী/বকনা,  ১০ হাজার ৯৪২ টি ছাগল, ৪টি ভেড়া সহ ১৪ হাজার ৮০২টি পশু কোরবাণি করা হয়। মুকসুদপুর উপজেলায় ২ হাজার ৫২২টি ষাঁড়/বলদ, ৬৭১টি গাভী/বকনা, ৯ হাজার ৫২৪ টি ছাগল,  ২টি ভেড়া সহ ১২ হাজার ৭১৯টি পশু কোরবানি হয়েছে। কাশিয়ানী উপজেলায় ২ হাজার ৩৭৮টি ষাঁড়/বলদ, ৬৪৮ টি গাভী/ বকনা, ৮ হাজার ৯৩০টি ছাগল সহ ১১ হাজার ৯৫৬টি পশু কোরবানি হয়েছে। কোটালীপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৯৬৫টি ষাঁড়/বলদ, ২৬৫টি গাভী/বকনা, ৬ হাজার ৯৯৮টি ছাগল ও ৩টি ভেড়া সহ ৯ হাজার ২৩১টি পশু কোরবানি করা হয়েছে। টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ২ হাজার ৩২২ টি ষাঁড়/ বলদ, ৬১১ টি গাভী/বকনা, ৬ হাজার ৭৬৩টি  ছাগল সহ ৯ হাজার ৬৯৬টি পশু কোরবানি হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, আমরা ৫ উপজেলার ৪ হাজার ২০৪টি খামারে কোরবানি যোগ্য  ৩৫ হাজার ২১৪টি গবাদি পশু  প্রস্তুত করি।  এ জেলার খামরে প্রস্তুতকৃত সব গবাদিপশু বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বাইরের জেলা থেকে আসা পশু কোরবানির হাটে ব্যাপক কেনা বেচা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এ জেলায় ঈদুল আযহায় উৎসবমুখর পরিবেশে রেকর্ড সংখ্যক পশু কোরবানি হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার ঈদকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে অন্তত ৪ শ’ কোটি টাকার পশু ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। পশু কোনাকাটার সাথে সংশ্লিষ্টরা অন্তত  ১শ কোটি টাকা আয় করেছেন। জেলার মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।  তাই রেকর্ড পরিমান পশু ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। কোরবানিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ জেলার গ্রামীণ অর্থনীতি এখন বেশ চাঙ্গা বলে মন্তব্য করেন ওই শিক্ষক ।
গোপালগঞ্জ জেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের খামারী রিপন আলী খান বলেন,  গোপালগঞ্জের কোরবানির হাটে রেকর্ড সংখ্যক পশু বিক্রি হয়েছে। কোরবানির আগের দিন আমদের হাটে অন্তত ১ হাজার হাজার পশু বিক্রি হয়েছে। এ বছর হাটে সবচেয়ে বেশি পশু বিক্রি হয়েছে। এছাড়া আমার ১০টি গরু আমি আগেই ভােল দামে বিক্রি করেছি।  এ বছর কোরবানির  পশুর হাট ছিল ক্রেতা- বিক্রেতার ভিড়ে সবেচেয়ে বেশি জমজমাট । এছাড়া হাটে কোরবানির পশু আমাদনি হয়েছিল  অনেক বেশি।
কোটালীপাড়া উপজেলার বন্ধাবাড়ী গ্রামের  বুলবুল আহমেদ পাইক বলেন, এ বারের কোরবানিতে গরু ও ছাগল দিয়ে ৫টি পশু কোরবানি করেছি। গত বছর ৪টি পশু কোরবানি করেছিলাম। এ বছর আল্লাহর ইচ্ছায় ১টি পশু বেশি কোরবানি করতে পেরেছি। সবাইকে সমান ভাগে পশুর মাংস বিতরণ করেছি। এ বারের কোরবানির ঈদ আমাদের এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশে হয়েছে। অনেকেই সামর্থ অনুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পশু কোরবানি করেছেন।