শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ জুলাই, ২০২৩ (বাসস): জাপান বাংলাদেশের বড় বড় (মেগা) প্রকল্পে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট দেশ গড়ার যে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, জাপান সরকার সেই অগ্রযাত্রায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাপানের ইকোনমি, ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রি মন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, জাপান দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে পাশে আছে। তারা আমাদের দেশের অনেক বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মাঝে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত অনুসন্ধান করার উপর উভয় নেতা গুরুত্বারোপ করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাপান-বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে জাপানে এ সংক্রান্ত প্রথম দফা আলোচনা হয়েছে এবং আগামী ২৫ থেকে ২৬ জুলাই ঢাকায় দ্বিতীয় দফা আলোচনা হবে। খুব শিগগিরই এই চুক্তি সম্পাদন করার বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত আছে বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে টিপু মুনশি আরও বলেন, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) মাধ্যমে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ সমস্যার সমাধান করে ব্যবসায় পরিবেশ উন্নত করা হবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিল্প উৎপাদন বাড়বে এবং আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে।
বাংলাদেশ ও জাপানের দুই প্রধানমন্ত্রীই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করার ইচ্ছা পোষণ করায়, উভয় দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ও সহযোগিতার মাত্রা আরও বিস্তৃৃত হবে উল্লেখ করেন টিপু মুনশি। এছাড়া বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হওয়ার পর, শুল্কমুক্ত বাণিজ্য অগ্রাধিকার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলেন জানান তিনি। তিনি বলেন, আগামী ৫০ বছর এক সাথে কাজ করার জন্য করণীয় এবং ব্যবসায়িক বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিভাবে দুইদেশের অর্থ-বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা যায়, সেসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, যেসব পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে যুক্ত, সেসব পণ্যের মূল্য উঠা-নামা করে থাকে মূলত আন্তর্জাতিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে। আন্তার্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারে বৃদ্ধি পায়, আবার দাম কমলে দেশেও কমে, যার প্রভাব সয়াবিন তেলের উপর পড়েছে। ভোজ্যতেলের দাম দুই দফা কমানো হয়েছে বলে তিনি জানান ।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরূদ্ধে সরকার সবসময় কঠোর অবস্থান নিয়ে থাকে। বাজার মনিটরিং করার জন্য ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। যারা অবৈধভাবে খাদ্যপণ্য মজুদ করবে, তাদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার আইনও পাশ করেছে।
সাক্ষাতকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ দুই দেশের সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত “বাংলাদেশের শিল্পের মানোন্নয়নের লক্ষ্য আগামী ৫০ বছরের জন্য বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক সম্পর্ক” বিষয়ক সম্মেলেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।